কুরআনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের কোন উল্লেখ আছে কি?

আসসালামু আলাইকুম। দয়া করে আমাকে জানাবেন কি কুরআনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের কোন উল্লেখ আছে কিনা। আমার এক বন্ধু আমাকে জানিয়েছে, কুরআনে মাত্র তিন ওয়াক্ত নামাজের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।  

ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহ ওয়া বারাকাত।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম।

সকল প্রশংসা ও শোকর আল্লাহর এবং দরুদ ও সালাম রাসূল (সা.) এর প্রতি।

কুরআনে নামাজের মোট ওয়াক্ত সম্পর্কে স্পষ্ট করে কোন উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু হাদীস থেকে আমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ সম্পর্কে স্পষ্ট নির্দেশনা পাই।

কুরআনে আল্লাহ নামাজের ওয়াক্তের কিছু নির্দিষ্ট সময়ের কথা উল্লেখ করেছেন। কিন্তু কুরআনে নির্দিষ্ট কোন সংখ্যার কথা উল্লেখ করা হয়নি যে, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হবে। 

কুরআনে আল্লাহ বলেছেন,

 “সূর্য ঢলে পড়ার সময় থেকে রাত্রির অন্ধকার পর্যন্ত নামায কায়েম করুন এবং ফজরের কোরআন পাঠও। নিশ্চয় ফজরের কোরআন পাঠ মুখোমুখী হয়। রাত্রির কিছু অংশ কোরআন পাঠ সহ জাগ্রত থাকুন। এটা আপনার জন্যে অতিরিক্ত। হয়ত বা আপনার পালনকর্তা আপনাকে মোকামে মাহমুদে পৌঁছাবেন।” (সূরা ইসরা, আয়াত: ৭৮-৭৯) 

এখানে, ‘সূর্য ঢলে পড়া থেকে রাত্রির অন্ধকার পর্যন্ত’ বলতে যোহর, আসর ও মাগরিব, তিন ওয়াক্তের নামাজকে একত্রে বোঝানো হয়েছে। রাতের অন্ধকারে  এবং ফজরের কুরআন পাঠ বলতে এশা ও ফজরের নামাজকে বোঝানো হয়েছে।

কুরআনে আরো বলা হয়েছে,

 “আপনার পালনকর্তার প্রশংসা পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন সূর্যোদয়ের পূর্বে, সূর্যাস্তের পূর্বে এবং পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করুন রাত্রির কিছু অংশ ও দিবাভাগে, সম্ভবত তাতে আপনি সন্তুষ্ট হবেন।” (সূরা তাহা, আয়াত:  ১৩০) 

“অতএব, তোমরা আল্লাহর পবিত্রতা স্মরণ কর সন্ধ্যায় ও সকালে, এবং দুপুর ও বিকেলে; নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে, তাঁরই প্রশংসা।” (সূরা রুম, আয়াত: ১৭-১৮)

এখানে কোন আয়াতে মোট কতবার দিনে নামাজ আদায় করতে হবে, তা উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু রাসূল (সা.) এর হাদীস থেকে আমরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের নির্দেশনা পাই। এই প্রসঙ্গে অসংখ হাদীসের বিবরণ আছে।

আল্লাহর রাসূল মূলত দ্বীনের নির্দেশনা দেওয়ার বিষয়ে আল্লাহর নির্দেশনারই অধীন ছিলেন। সুতরাং, তিনি যেহেতু পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজের নির্দেশনা দিয়েছেন, আমাদের নিশ্চিত হওয়া উচিত তা মূলত আল্লাহরই নির্দেশনা অনুযায়ীই তিনি নির্দেশ করেছেন। 

সুতরাং যে ব্যক্তি নির্ধারিত পাঁচ ওয়াক্তের কম অথবা বেশি নামাজের বিষয়ে বলে, সে ইসলামের নির্দেশনার বিপরীত কথা বলে। 

আল্লাহই উত্তম জ্ঞানের অধিকারী।

Leave a comment